হামজাকে গালি-ধাক্কা, দুর্ব্যবহার বার্নলি সমর্থকদের

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সরাসরি ওঠার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে শেফিল্ড ইউনাইটেডের। সোমবার রাতে টার্ফ মুরে বার্নলির কাছে ২-১ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষ দুইয়ের বাইরে ছিটকে যায় হামজা চৌধুরীর দল। তবে ম্যাচ শেষে সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের জাতীয় দলের ফুটবল ইতিহাসে প্রথম প্রিমিয়ার লিগ খেলা ফুটবলার হামজা চৌধুরী। মাঠ ছাড়ার সময় তাকে ঘিরে ঘটে গেছে অপ্রীতিকর ঘটনা।

বার্নলির জয় নিশ্চিত হওয়ার পর হাজারো সমর্থক মাঠে ঢুকে পড়েন উল্লাস করতে। এ সময় হঠাৎ কয়েকজন দর্শক মাঠে থাকা শেফিল্ড খেলোয়াড়দের দিকে এগিয়ে আসেন। সেই তালিকায় ছিলেন হামজা চৌধুরীও। ক্যামেরায় দেখা যায়, এক দর্শক তাকে উদ্দেশ্য করে কিছু বললে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেন হামজা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, এমনকি তাকে শারীরিকভাবে থামাতে বাধ্য হন নিরাপত্তাকর্মী ও ক্লাব কর্মকর্তারা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামজাকে শুধু কটূক্তিই নয়, বর্ণবৈষম্যমূলক মন্তব্যও শুনতে হয়েছে। স্কাই স্পোর্টসের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে মাঠ থেকে টানতে টানতে টানেলে নিয়ে যাচ্ছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে তীব্র সমালোচনা। কেউ লিখেছেন, ‘বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন হামজা’। আরেক ভক্ত মন্তব্য করেছেন, ‘ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিপক্ষে সোচ্চার ছিলেন হামজা। এজন্য হামলা হয়েছে তার ওপর।’ তবে কি নিয়ে কথা হয়েছে হামজা বা তার ক্লাব শেফিল্ড থেকে এ নিয়ে কিছু জানানো হয়নি এখনও।ম্যাচ শেষে শেফিল্ড কোচ ক্রিস ওয়াইল্ডার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ম্যাচের আগে রেফারির কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছিলাম যে খেলোয়াড়দের ঘিরে নিরাপত্তা থাকবে। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার পর তাদের কোনো খোঁজই পাওয়া যায়নি। সেটা ছিল খুবই ভয়ের একটা মুহূর্ত।’

ওয়াইল্ডার আরও বলেন, ‘৪০-৫০ জন উত্তেজিত দর্শক যখন আপনার দিকে দৌঁড়ায় এবং বাজে ভাষায় কিছু বলে কিংবা কিছু করে, তখন মাঠ ছাড়াটা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। আমি নিশ্চিত, এর দায় আমাদের ঘাড়ে চাপানো উচিত হবে না।’

মাঠের খেলায় অবশ্য হামজা ছিলেন শেফিল্ড ইউনাইটেডের অন্যতম উজ্জ্বল পারফর্মার। পুরো ম্যাচে ৪৭টি পাসের মধ্যে ৪২টিই সফলভাবে সম্পন্ন করেন তিনি (৮৯ শতাংশ সফলতা)। প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকাতে ৩টি ট্যাকল করে ২টিতে জয়ী হন, করেন ৫টি ক্লিয়ারেন্স এর মধ্যে ৪টিই হেডে। ৭টি বল পুনরুদ্ধার করে মাঝমাঠে ছিলেন বল নিয়ন্ত্রণে অতুলনীয়।

ম্যাচে বার্নলির হয়ে দুটি গোল করেন জোশ ব্রাউনহিল। ২৮ মিনিটে রিবাউন্ড থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন তিনি। ৩৭ মিনিটে সমতা ফেরান শেফিল্ডের টম ক্যানন। তবে বিরতির আগেই পেনাল্টি থেকে আবারও লিড এনে দেন ব্রাউনহিল।

৪৪ ম্যাচ শেষে বার্নলি ও লিডস ইউনাইটেড ইতোমধ্যেই ৯৪ পয়েন্ট নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে জায়গা নিশ্চিত করেছে। শেফিল্ডের পয়েন্ট ৮৬, অর্থাৎ সরাসরি প্রিমিয়ার লিগে ওঠার সম্ভাবনা শেষ। এখন প্লে-অফের দুই ম্যাচই তাদের সামনে একমাত্র সুযোগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial