ঢাকা আন্তর্জাতিক ম্যারাথন ২০২৫: দৌড়ের মঞ্চে এক অনন্য উদযাপন

 

জীবন প্রধান
৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এ ঢাকার ৩০০ ফিট এলাকায় অনুষ্ঠিত হলো ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক ম্যারাথন ২০২৫’। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় দেশি-বিদেশি প্রায় ১০,০০০ প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১০টি দেশের অভিজ্ঞ ও নবীন ম্যারাথন দৌড়বিদরা ছিলেন, যা এই প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিকতাকে আরো সুদৃঢ় করেছে।

ম্যারাথনটি পাঁচটি বিভাগে বিভক্ত ছিল—ফুল ম্যারাথন (৪২.২ কিমি), হাফ ম্যারাথন (২১.১ কিমি), ১০ কিমি সাধারণ, ১০ কিমি নতুন প্রতিযোগীদের জন্য এবং ১০ কিমি ভেটেরান ক্যাটাগরি। এই ভিন্ন ক্যাটাগরিগুলো ম্যারাথনপ্রেমীদের জন্য অংশগ্রহণের সুযোগ সহজ করে তোলে। বিশেষ করে নতুন দৌড়বিদদের জন্য আলাদা বিভাগ রাখার ফলে অভিজ্ঞতাহীন প্রতিযোগীরাও অংশগ্রহণের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।

প্রতিযোগিতার মূল প্রতিপাদ্য ছিল **‘Run for Unity, Run for Humanity’**—যা বিশ্বব্যাপী সম্প্রীতি, মানবতা ও সুস্বাস্থ্যের বার্তা বহন করে। অংশগ্রহণকারীরা শুধুমাত্র প্রতিযোগিতার জন্য দৌড়াননি, বরং সুস্থ জীবনধারা, পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও একতা তৈরির এই মহতী উদ্যোগে নিজেদের যুক্ত করেছেন।

উদ্বোধনী এবং সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণকালে তিনি বলেন, ‘এই ম্যারাথন শুধুমাত্র প্রতিযোগিতা নয়, এটি বিশ্ব সংহতি এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রতীক।’

সকাল থেকেই ম্যারাথন কেন্দ্রিক আয়োজনকে ঘিরে সাধারণ মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। অংশগ্রহণকারীদের জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা, পানীয় জল ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। দর্শকদের করতালিতে প্রতিযোগীদের এগিয়ে চলার দৃশ্য এক অনন্য আবহ তৈরি করে।

এই আয়োজনের ফলে ঢাকার মানুষ একদিনের জন্য হলেও গাড়ির কোলাহল থেকে মুক্ত হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন দৌড়ের আনন্দ উপভোগ করতে। ম্যারাথন শেষে অংশগ্রহণকারীরা জানান, এটি শুধু দৌড় নয়, বরং এক অনুপ্রেরণার গল্প, যেখানে প্রত্যেকেই নিজের শারীরিক ও মানসিক শক্তির পরীক্ষা দিতে নেমেছিলেন।

‘ঢাকা আন্তর্জাতিক ম্যারাথন ২০২৫’ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। এটি কেবল একটি ক্রীড়া আয়োজন নয়, বরং সুস্বাস্থ্য, সংহতি এবং মানবতার জয়গানের প্রতিচ্ছবি। আগামী বছর আরও বড় পরিসরে এই আয়োজনের প্রত্যাশায়, এই ম্যারাথন অংশগ্রহণকারীদের জন্য এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।

মো. জীবন প্রধান (শিক্ষার্থী)
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial