‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে গার্মেন্টস কর্মকর্তাকে অপহরণ, গ্রেপ্তার ৪

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে পোশাক কারখানার এক কর্মকর্তা ও তার চালককে বাসা থেকে অপহরণ এবং মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনার পর গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নগরের আকবরশাহ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে অপহরণের পাঁচ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন– নগরের ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের নাজমুল আবেদিন, একই ওয়ার্ডের সিটি গেইট এলাকার নইমুল আমিন ইমন, আকবরশাহ থানার সিডিএ আবাসিক এলাকার আরাফাত হোসেন ফাহিম ও রিসতি বিন ইউসুফ। তাদের মধ্যে নাজমুল আবেদীন নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দেন। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জানিয়েছেন, এই নামে তাদের কোনো সদস্য নেই।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নাজমুলের নেতৃত্বে নগরের আকবরশাহ থানার সিডিএ আবাসিক এলাকার বাসা থেকে প্যাসিফিক জিন্সের এজিএম আবেদিন আল মামুনকে অপহরণ করা হয়। তার গাড়িচালক জুয়েলকেও জিম্মি করে তারা। পরে গাড়িতে নগরের পতেঙ্গা সাগরপাড়, কর্নেলহাট জোন্স রোড, পাহাড়তলী ও আকবরশাহ থানার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে থাকে দলটি। এর মধ্যে মামুনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার লিলির সঙ্গে যোগাযোগ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। লিলি তাদেরকে পাঁচ লাখ টাকা নগদ পরিশোধ করেন। বাকি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক লিখে দেন। পরে রাত আড়াইটার দিকে নগরের জাকির হোসেন সড়কের অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের সামনে মামুন ও জুয়েলকে রেখে সটকে পড়ে দলটি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এরপর সকাল ৯টা পর্যন্ত একাধিক অভিযানে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ইমনের বাসা থেকে পাঁচ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) হুসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া বলেন, বারবার স্থান পরিবর্তন করায় দলটিকে তারা প্রথমে ধরতে পারেননি। একপর্যায়ে তারা ওই কর্মকর্তা ও তার চালককে রেখে পালায়। পরে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন বলেন, কমিটি ঘোষণার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। তা ছাড়া যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা কেউ আমাদের সদস্য নয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ভাঙিয়ে কেউ অপকর্ম করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial